পালং শাক ও এর জুস খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা
পালং শাক ও এর জুসের উপকারিতা সম্পর্কে আজ আমরা জানতে চলেছি আতি প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য সম্পর্কে। পুষ্টিগুনে ভরা অনন্য পালং শাক সম্পর্কে সবাই কম বেশি জানে।
শীতকালীন শাক হলেও সারা বছর পালং শাক পাওয়া যায়। দামে কম আত্যন্ত পুস্টি সমৃদ্ধ এই শাক যে কেউ তার খাদ্য তালিকাই রখতে পারে। তবে দেরি কেন দ্রত যেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ পালং শাকের কিছু অনন্য উপকারিতা
- পালং শাকের কিছু অনন্য উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় পালং শাকের উপকারিতা
- খাদ্য ও পুস্টিমানে ভরপুর পালং শাক
- পালং শাক হাড়ের সুরক্ষা করে
- ক্যান্সার প্রতিরোধে পালং শাকের ভূমিকা
- বার্ধক্য রোধে পালং শাক
- কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে পালং শাক
- পালং শাকের জুসের গুণাবলি
- শারীরিক শক্তি ও পুষ্টিতে পালং শাক
- লেখকের মন্তব্যঃপালং শাকের কিছু অনন্য উপকারিতা
পালং শাকের কিছু অনন্য উপকারিতা
পালং শাক ও এর জুসের উপকারিতার শেষ নেই। স্ব্যাস্থ ভালো রাখতে কে না চায়। এই স্ব্যাস্থকে ভালো রাখার জন্য মানুষ অনেক কিছু নিয়ম মেনে চলে তার মধ্যে খাদ্যাভাস একটি। এই খাদ্যাভাসে যদি আমরা পালং শাকের মতো সুপার ফুড এ্যাড করি তাহলে আমাদের শরীর ও মন উভই ভালো থাকবে। কারন এতে রয়েছে ক্যালশিয়াম,ভিটামিন,আয়রন,ফাইবার,খনিজ লবন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপদান।
এসব উপদান মানুষের শরীর সুস্থ্য রাখতে অতিব প্রয়োজনীয়। মানব দেহের সজীবতা, তারন্য, ও উজ্জীবতাই পালং শাকের উপদানগুলোর ভূমিকা অনন্য। ক্যালশিয়াম হাড় গঠন ও ক্ষয় রোধ করে, ভিটামিন রোগপ্রতিরোধে মূল ভূমিকা পালন করে। আয়রন হার ও রক্ত সল্পতা পুরন করে, ফাইবার দেহকে সজীব করে এবং দেহের মধ্যে সঞ্জীবতা প্রদান করে।
খুনিজ লবন দেহের মধ্যে পানির ভারসাম্য প্রদান ও দেহকে সতেজ করে।
গর্ভাবস্থায় পালং শাকের উপকারিতা
পালং শাক পুষ্টিগুনে ভরপুর থাকাই একটি গর্ভবতী নারীর জন্য এই শাক খুবই উপকারি। একজন গর্ভবতী নারী গর্ভবতী অবস্থায় বেশি ভগে পুষ্টিহীনতাই। এ সময় তার শরীরে হিমগ্লোবিন ও ক্যালশিয়ামের সল্পতা দেখা দেয়। যার কারনে মা ও শিশুর উভয়ের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। আমরা যদি এই গর্ভবতী নারীর খাবার তালিকাই পালং শাক যুক্ত করি তাহলে এ সমস্যার সমাধান করা যায়।
পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমানে আয়রন ও ফলিক এসিড যা গর্ভবতী মায়ের শরীরে হিমগ্লোবিন তৈরী করে ফলে মায়ের দেহে আয়রনের ঘাটতি পূরন করে। আয়রনের ঘাটতি পরুনের মাধ্যমে গর্ভবতী মায়ের শরীরের রক্ত সল্পতা দূর হয়। রক্তের মূল উপদান তৈরীতে ক্যালশিয়াম উল্যেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। গর্ভবতী নারীর শরীরে এ অবস্থায় ক্যালশিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়।
আমরা যদি এই নারীর খাবার তালিকাই পালং শাক যুক্ত করি তাহলে এ সমস্যার সমাধান অতি সহজে করা যায়। কারন আমরা যানি পালং শাকে প্রচুর ক্যালশিয়াম রয়েছে যদি গর্ভবতী অবস্থায় খাদ্য তালিকায় নিয়ম করে পালং শাক রাখা যায় তাহলে দেহে আর ক্যালশিয়ামের ঘাটতি দেখা দিবেনা। মা ও শিশু উভয়ই থাকবে নিরাপদ।
খাদ্য ও পুস্টিমানে ভরপুর পালং শাক
আগেই বলেছি পালং শাক ও এর জুস উচ্চমানের পুষ্টিগুনসম্পন্ন। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফলিক আসিড, ক্যালশিয়াম, আয়রন, ভিটামিনঃ এ,বি,সি,কে, ম্যাঙ্গানিজ,ম্যাগনেশিয়াম। প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে রয়েছে ২৩ গ্রাম ক্যালরি, ০৩ গ্রাম আমিষ,০৪ গ্রাম শর্করা ও ০২ গ্রাম আঁশ থাকে। পালং শাকে কোন প্রকার চর্বি নেই এতে প্রচুর পরিমানে পানি থাকে।
পালং শাকে প্রচুর পরিমানে পানি থাকায় এটি মানব দেহের পানি সল্পতাকে পুরুন করতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করে। ফলে দেহের কোষ-কলা সজীব ও জীবন্ত থাকে। শরীরে পানি সল্পতা না থাকলে মানুষিক চাপ কুমে যায় মনে প্রশান্তি আসে। এতে কোন প্রকার চর্বি তো নেয়ই আবার নিয়মিত পালং শাক খেলে শরীরের চর্বি কমাতে এটি অত্যন্ত কার্যকরী।
পালং শাকে প্রচুর পরিমানে ক্যালরি আছে যা দেহে শক্তি বৃদ্ধি করে ও দেহকে কার্যক্ষম করে তোলে। আমিষ দেহ গঠনের মূল উপদান। এটি মানব দেহ গঠনের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধে মূল ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিন পুষ্টিকর পালং শাক খাদ্য তালিকাই রাখলে মানুষের স্ব্যাস্থের জন্য এই সুপারফুড অনেক উপকারী।
আরো পড়ুনঃখালি পেটে সকালে রসুন খাওয়ার ১২ টি উপকারিতা
বর্তমান সময়ে মানুষ তার খাদ্যাভাস এমন ভাবে পরিবর্তন করেছে যে খাবার তালিকাই পুস্টিকর খাবার নেই বললেই চলে। যার কারনে মানুষ এর দেহে অনেক রোগ বাসা বেঁধেছে হাড় ক্ষয় বা আর্থ্রাইটিস তাদের মধ্যে অন্যতম।মানুষের খান্য তালিকাই ভিটামিন ও ক্যালশিয়াম না থাকার কারনে বর্তমান সময় এই রোগ প্রকট আকার ধারন করেছে।
পালং শাকে রয়েছে ভিটামিন বি বা রিভোফ্লাবিন ও প্রচুর পরিমানে কালশিয়াম। নিয়মিত খাদ্য তালিকাই পালং শাক রাখলে হাড় ক্ষয় বা আর্থ্রাইটিস এর মতো জটিল রোগ থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যার। বিষেশকরে যাদের বয়স ৩৫ পার হয়েছে তাদের খাদ্য তালিকাই এই সুপার ফুড আমরা রাখতে পারি।কারন ৩৫ বছর পর্যন্ত মানুষের শরীরে চাহিদা অনুযায়ী প্রোয়োজনীয় উপদান তৈরী হয়।
এই সময়টা পার হলে মানুষের শরীরে চাহিদা অনুযায়ী প্রোয়োজনীয় উপদান তৈরী হয় না । সে ক্ষেত্রে শরীরে বিভিন্ন উপদানের পাশাপাশি ক্যালশিয়াম ও ভিটামিনের অভাব দেখা দেয়। এই অভাব পুরনে পালং শাক অনেকটা সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
ক্যান্সার প্রতিরোধে পালং শাকের ভূমিকা
সুপার ফুড পালং শাক ও এর জুসের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবেনা। পুষ্টিগুন সম্পন্ন পালং শাকে রয়েছে ক্যারোটিনয়েডিস ও উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা প্রটেস্ট ক্যান্সার ও ওভারিয়ান ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। ক্যারোটিনয়েডিস ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট দেহের ভিতরে এমন পরিবেশ তৈরী করে যাতে করে রোগ জীবানু অতি সহজে দেহে সংক্রামিত না করতে পারে।
নিয়মিত পরিমিত পরিমান পালং শাক ও এর জুস আপনার খাদ্য তালিকায় থাকলে আপনি অনেকটা ক্যান্সার থেকে মুক্ত থাকতে পারেন। এই শাক অনেকেই এড়িয়ে চলে শুধুমাত্র প্রসেস করে যাতে না খেতে হয়। আপনি ইছে করলে রান্না না করে জুস বানিয়ে খেতে পারেন। আপনারা জানেন বিশ্বে কতো মানুষ মারা যায় ক্যান্সারের কারনে।
যদি আমরা একটু সচেতন হই আমাদের খাদ্য তালিকাই নিয়মিত এই খাবার রাখি তাহলে মরন ব্যাধি এই রোগ থেকে সহজে মুক্তি পেতা পারি।
আরো পড়ুনঃ নিম পাতার ব্যবহারের সটিক নিয়ম ও এর উপকারিতা
বার্ধক্য রোধে পালং শাক
অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি আমরা যদি পালং শাক আমাদের খাদ্য তালিকাই রাখতে পারি তাহলে এতি আমাদের দেহের পুষ্টির ঘাটতি পুরুন করে। আজ কাল অকাল বার্ধক্য দেখা যায় পুষ্টিহীনতার কারনে। আধুনিক মানুষ স্ব্যাস্থ্য সম্মত খাদ্যাভাসের পরিবেশ তৈরী করতে না পারার কারনে ও অনিয়মিত জীবন ধারার কারনে তারা অল্প বয়সে বৃদ্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বার্ধক্য রোধে পালং শাক ও এর জুস অত্যন্ত কার্যকরী। নিয়মিত এই শাক খেলে শরীরের কার্ডিও ভাস্কুলার সিস্টেম ও মানুষিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। পালং শাখের আয়রন লাল রক্ত কনিকা গটনে সাহায্য করে,যা সারা দেহে অক্সিজিন সরবরাহ করে শরীরে শক্তি ফিরিয়ে আনে।
এই ভিটামিন ত্বকের উজ্জলতা বাড়িয়ে বার্ধক্য রোধ করে ও অকাল চুল পরা বন্ধ করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে পালং শাক
আমরা জানি বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ মানুষ কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যার মধ্যে আছে। সময়মত পুস্টিকর খাবার না খাওয়া ও নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম না করা এর মূল কারন। বাহিরের খাবার খাওয়া মানুষের এখন নিয়মিত অভ্যাসে পরিনিত হয়েছে। যা এ সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। এ সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে হলে আমাদের খাদ্যাভাস পরিবর্তনের পাশাপাশি আঁশ বা ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবে।
সুপার ফুড পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমানে আঁশ বা ফাইবার যুক্ত খাবার যা নিয়মিত খেলে আমাদের পরিপাক তন্ত্রকে ভালো রাখতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। প্রতিনিয়ত আমরা যে খাবার খাই ফাইবার সেই খাবারকে হজম করতে সাহায্য করে। হজমকৃত খাবারের সাথে মিশে ফাইবার মলকে নরম ও পচ্ছিল করে ফলে খুব সহজে খাবার দেহ থেকে বের হয়ে আসে।
ফলে ফাইবার যুক্ত পালং শাক খাওয়ার কারনে মানুষের অন্যান্য উপকারের পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে উল্ল্যেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
আরো পড়ুনঃগর্ভাবস্থায় পাকা কলা খাওয়ার ৭টি প্রধান উপকারিতা
পালং শাকের জুসের গুণাবলি
আমরা ভারত উপমহাদেশে বসবাস করি। এ অঞ্চলের মানুষ খাবারে প্রচুর মসলা ব্যবহার করে রান্না করে খায়। কিন্তু জাপান কোরিয়া সহ অন্যান্য দেশ মসলার ব্যবহার ও বেশি ভাগ সময় রান্না ছাড়াই খেয়ে নেয়। এতে করে খাবারে পুষ্টিগুন অক্ষুন্ন থাকে। যার কারনে দেখা যায় তারা অনেক বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
সে দিক থেকে বিবেচোনা করলে দেখা যায় রান্না করা খাবারের শাক-সব্জিতে রান্না করা ছাড়া শাক-সব্জির তুলনাই কম পুষ্টি থাকে। তাই বলতে পারি পালং শাক যদি আমরা জুস করে খাই তাহলে আমরা ১০০ ভাগ আমাদের দেহে পুষ্টি পাবো। রান্না করা পালং শাকের তুলনাই পালং শাকের জুস শরীরের জন্য আরো অনেক বেশি উপকারী।
আমরা প্রতিদিন পালং শাকের জুস খেতে পারি আমাদের শারীরিক অবস্থার উপুর বিবেচোনা করে।
শারীরিক শক্তি ও পুষ্টিতে পালং শাক
পালং শাক ও এর জুস শারীরিক শক্তি ও শরীরে পুষ্টি বৃদ্ধিতে অন্যান্য শাকের তুলনায় অনেক বেশি ভূমিকা পালন করে। প্রতি ১০০ গ্রাম পালং শাকে রয়েছে ২৩ গ্রাম ক্যালরি, ০৩ গ্রাম আমিষ,০৪ গ্রাম শর্করা ও ০২ গ্রাম আঁশ থাকে। পালং শাকে কোন প্রকার চর্বি নেই এতে প্রচুর পরিমানে পানি থাকে। এই সকল উপদান দ্রত শরীরকে শক্তিশালী করে তুলে
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফলিক আসিড, ক্যালশিয়াম, আয়রন, ভিটামিনঃ এ,বি,সি,কে, ম্যাঙ্গানিজ,ম্যাগনেশিয়াম।এই শাকে যে পরিমান ভিটামিন কে রয়েছে তা অন্য কোন শাকে নেই। এই ভিটামিন ত্বকের উজ্জলতা বাড়িয়ে বার্ধক্য রোধ করে ও অকাল চুল পরা বন্ধ করে।পালং শাখের আয়রন লাল রক্ত কনিকা গটনে সাহায্য করে,যা সারা দেহে অক্সিজিন সরবরাহ করে শরীরে শক্তি ফিরিয়ে আনে।
লেখকের মন্তব্যঃপালং শাকের কিছু অনন্য উপকারিতা
আমরা এতক্ষন পালং শাক ও এর জুস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করলাম। আলোচনার মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম পালং শাক ও এর জুস খুবই পুষ্টীকর খাবার। যা সঠিক মাত্রাই খেলে আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকার হবে।
আমার এই ব্লগার ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।এতক্ষনে আমরা পালং শাকের উপকারিতা নিয়ে যে কথাগুলো বলেছি তাতে যদি আপনারা একটু উপকৃত হয়ে থাকলে আমার এই ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিট করবেন। আজ এই পর্যন্ত সকলের মঙ্গল কামনা করে শেষ করছি ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url